খোয়াই, 22/09/2025, নিজস্ব প্রতিনিধি : খোয়াই জেলায় বিষধর সাপের আতঙ্কে যখন জনজীবন দিশেহারা, তখন একমাত্র ভরসার নাম জোগেশ সাহানি। বন দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও বনকর্মীদের নাগাল মেলা প্রায় অসম্ভব, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের। তাই বিপদের মুহূর্তে এক কলেই ছুটে আসেন তাঁতচৌমুহনীর বাসিন্দা জোগেশ সাহানি।
বছরের পর বছর ধরে নিঃস্বার্থভাবে সাপ ধরার কাজ করছেন তিনি। নিজের দাবি অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই হাজার খানেক সাপ ধরেছেন লোকালয় থেকে। তবে মেরে ফেলা নয়, প্রতিটি সাপকেই নিরাপদে জঙ্গলে ছেড়ে আসেন তিনি। সম্প্রতি তাঁর হাতে ধরা পড়েছে একটি ভয়ঙ্কর বিষধর গোখরা, স্থানীয়ভাবে যাকে বলা হয় ‘পানক সাপ’। ফনা তোলা মাত্রই কামড় দিতে সক্ষম এই প্রজাতি, আর চিকিৎসা না পেলে নিশ্চিত মৃত্যু ঘটে। এমন সাপকে তিনি অবলীলায় হাতের মুঠোয় ধরে জল খাওয়াচ্ছেন, এ দৃশ্য রীতিমতো অভাবনীয় সাহসের নিদর্শন।
স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, জোগেশ সাহানির মতো মানুষদের সরকারি স্বীকৃতি ও সম্মান জানানো উচিত, কারণ বন দপ্তরের দায়সারা মনোভাব আজ জনসাধারণকে কার্যত বেসরকারি উদ্যোগের উপর নির্ভর করতে বাধ্য করছে।
খোয়াইবাসীর অভিযোগ, জেলার বিভিন্ন দপ্তরের মতোই বন দপ্তরের কাজকর্মেও দায়বদ্ধতার অভাব প্রকট। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বনভূমি সংকুচিত হওয়ায় বন্যপ্রাণী লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। বিষধর সাপ থেকে অজগর পর্যন্ত নিয়মিত দেখা মিলছে। অথচ বড় দুর্ঘটনা না ঘটলে কিংবা মিডিয়ার নজরে না আসা পর্যন্ত বনকর্মীদের কার্যত খোঁজ মেলে না। ফলে প্রশ্ন উঠছে—ত্রিপুরার প্রশাসন কবে মানুষের নিরাপত্তা ও পরিবেশ রক্ষায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেবে? তার আগে পর্যন্ত খোয়াইতে সাপ আতঙ্ক কাটাতে একমাত্র ভরসা হয়েই থাকবেন জোগেশ সাহানি।